★আযান ও ইকামতে রাসূলল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম মুবারক শুনে চোখে বৃদ্ধাঙ্গুলি লাগিয়ে চুমা খাওয়ার আমল বিষয়ে কিছু কথা :

------------------------------------------------


আযানে রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম শুনে  তাকবীলুল ইবহামাইন তথা বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা দু চোখে চুমা খাওয়া সম্পর্কে দাইলামী রহ, এর মুসনাদুল ফিরদাউস কিতাবে একটি হাদীস আছে বলে ইমাম সাখাবী রহ, আল মাকাসিদুল হাসানায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এর সনদ তিনি উল্লেখ করেননি। তবে একথা বলেছেন যে এটা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত নয়।  এর দ্বারা যে মাওজুয়াতের কিতাবে হাদীসটি জাল বুঝায় সেটি ইমাম জাহেদ কাউসারী ও আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহ, উল্লেখ করেছেন। 


হাদীসটি প্রমানিত নয় একথা থেকে ভুল বুঝে কেউ কেউ হাদীসটি দ্বয়ীফ মনে করে ফযীলত লাভের আশায় আমল করা শুরু করেছেন এবং অনেক বুযুর্গরাও এ আমল করেছেন । তবে হাদীসটি আমলযোগ্য বলে মনে হয় না, কেউ কেউ এটাকে জাল হাদীসের কিতাবেও উল্লেখ করেছেন।  


আমি দাইলামীর কিতাবে বহু খুঁজেও হাদীসটি কিংবা তার সনদ কোনটিই পাইনি।  আর কোন হাদীসের কিতাবেও এর অস্তিত্বও পাওয়া যায় না। দাইলামী তো পাঁচশ হিজরীর পরের মানুষ,  তার আগের কোন ফিকহের কিতাবের আজানের অধ্যায়েও এ আমলের কথা খুঁজে পাওয়া যায় না,  অথচ আজানের জবাব নিয়ে ফিকহের সব কিতাবেই আলোচনা থাকে। আর দাইলামীর কিতাব যে অত্যন্ত অনির্ভরযোগ্য কিতাব সেটা উলামায়ে কিরাম স্পষ্টভাবে বলেছেন। সুতরাং এ হাদীস পরবর্তী কেউ যাচাই বাছাই ছাড়া উল্লেখ করলেই তা দলীলযোগ্য হয়ে যাবে না। 


যেহেতু এ আমলটির অস্তিত্ব মুসনাদে দাইলামীর পূর্ববর্তী কোন কিতাবে নেই তাই বলা যায় এ আমলটি ভিত্তিহীন। এটাকে ইবাদত মনে করা ভূল হবে। তবে যারা এটা জাল হাদীস মনে না করে দ্বয়ীফ ভেবে ফযীলতের আশায় আমল করছেন তারা ভূলের মধ্যে আছেন।  কিন্তু তাই বলে এ আমলের কারনে তাদের গোমরাহ, পথভ্রষ্ট, বিদয়াতী বলা চরম বাড়াবাড়ি। কারন এটা একটা সাধারণ ভূল মাসয়ালা,  আকীদা নয়।  তাই আমলকারীদের আন্তরিকভাবে ও দরদের সহিত বিষয়টি বুঝিয়ে সংশোধন করে দিতে হবে। তবে যারা এ আমলের পক্ষাবলম্বন করতে করতে একে আকীদার মত বানিয়ে এর  বিরোধীপক্ষকে ওহাবী বা নবীর দুশমন নামে মিথ্যা অপবাদ দেয় তারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মাঝে আছেন। একে কোনভাবেই দলাদলি ঝগড়াঝাঁটি বিভেদের কারন বানানো যাবে না ও হক বাতিলের মানদণ্ড বানানো যাবে না। 


আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভুল আমল করা ও প্রান্তিকতা হতে হেফাজত করুন।